সাচনা রামকৃষ্ণ মিশন (ছবি: সংগৃহীত)
সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা গ্রামে একের পর এক চুরির ঘটনায় গ্রামবাসী চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিক এসব চুরির ঘটনায় স্থানীয়রা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অভিযোগ দায়ের হলেও এখনো চোরচক্রকে শনাক্ত করতে বা চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়নি পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি চুরির শিকার হয়েছেন সাচনা গ্রামের রামকৃষ্ণ মিশনের মন্দির, সাংবাদিক দেবব্রত ঘোষ চৌধুরীর বাড়ি, শিক্ষক নবগোপাল রায়ের বাড়ি, সাচনা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক প্রাণতোষ ঘোষ চৌধুরীর বাড়ি, জামালগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অর্ধেন্দু ঘোষ চৌধুরীর বাড়ি এবং জামালগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক দীনেশ চন্দ্র দাশের বাড়ি।
এছাড়া গ্রামের নিগমানন্দ সরস্বতী মন্দিরের দানবাক্স ভেঙে নগদ অর্থ চুরি হয়েছে।
গত বছর ৫ আগস্টের পর প্রাণতোষ ঘোষ চৌধুরী ও নবগোপাল রায়ের বাড়িতে চুরি হয়। চলতি বছরের জুলাই মাসে চুরি হয় অর্ধেন্দু ঘোষ চৌধুরীর বাড়িতে।
সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে সাংবাদিক দেবব্রত ঘোষ চৌধুরীর বাড়িতে চুরি হলে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর মাত্র পাঁচ দিন পর রামকৃষ্ণ মিশনের মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রামকৃষ্ণ মন্দিরের সম্পাদক অনন্ত পাল মামলা দায়ের করেন।
আর গত শনিবার রাতে জামালগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক দীনেশ চন্দ্র দাশের বাড়ি থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ বাসনপত্র নিয়ে যায় চোরেরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায়ই রাতের অন্ধকারে চোরচক্রের তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। গ্রামের পিছনে মাদকাসক্তদের আড্ডাও বেড়ে গেছে। এতে গ্রামবাসী আতঙ্কে রাত জেগে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষ করে শিক্ষক, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বাড়ি টার্গেট হওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও আতঙ্ক বাড়ছে।
সাংবাদিক দেবব্রত ঘোষ চৌধুরী বলেন, ‘চোরেরা তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে আলমারি ভেঙে জিনিসপত্র খুঁজেছে। তারা মূলত কাঁসার বাসনপত্রই চুরি করছে।’
জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রবীন্দ্র কুমার দাস বলেন, ‘ধারাবাহিক চুরির ঘটনায় গ্রামে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ এখনো পর্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি।’
এ বিষয়ে জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তদন্তের জন্য সার্কেল অফিসারসহ আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। সবগুলো চুরির ঘটনা একই চক্রের কাজ বলে ধারণা করছি। আশা করছি দ্রুতই চোরচক্রকে শনাক্ত করতে সক্ষম হবো।'
