‘গ্যালারিতে বসে খেলা দেখার দিন শেষ। আমরা এখন নিজে খেলব’:মুহাম্মদ ইউনূস

জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক পরামর্শক হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশ ও জাতি পুনর্গঠনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেছেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ‘জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের ফলে যে পরিবর্তনের স্বপ্ন আমরা দেখছি, তা এগিয়ে নিতে প্রবাসীরা নিজ নিজ সক্ষমতা অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘দূরে গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে খেলা দেখব, এমনটা হবে না। গ্যালারিতে বসে দেখার দিন শেষ। আমরা এখন নিজে খেলব।’

এই মন্তব্য তিনি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার আগে স্থানীয় সময় শনিবার ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক ইউনূস তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন একটি প্রেজেন্টেশন দেন। এতে তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গত ১৫ মাসে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি তুলে ধরেন এবং রেমিট্যান্সে ২১ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। পাশাপাশি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকারের উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন।

এ আয়োজনে ‘ব্রিজিং বর্ডারস: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ডায়াস্পোরা এনগেজমেন্ট’ শীর্ষক একটি ইন্টারেক্টিভ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এটি সঞ্চালনা করেন। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুলসহ তিনজন এতে অংশ নেন।

এছাড়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারা-বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামী নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে দেশের জন্য তাঁদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এ আয়োজনে তুলে ধরেন।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ‘শেপিং টুমোরো: দ্য ফিউচার অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা সঞ্চালনা করেন। এতে এনসিপি নেতা তাসনিম জারা, বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির ও জামায়াত নেতা নাকিবুর রহমান প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশ নেন।

উদ্যোগের অংশ হিসেবে অধ্যাপক ইউনূস ‘শুভেচ্ছা’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ উদ্বোধন করেন। এটি প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা, নির্দেশনা ও বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে।