আগুনরায়েরগাঁও
বিদ্যুতের খুঁটি উঠোনে, ঘরে এখনো অন্ধকার
ছয় পরিবার এক যুগ থেকে অন্ধকারে
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫ ১৬:৩৪

ছবি: সংগৃহিত।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের আগুনরায়ের গাঁও গ্রামে যখন প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বলছে, তখন সেই একই গ্রামের ছয়টি পরিবার এক যুগ ধরে রয়ে গেছে অন্ধকারে।
অবাক করার মতো হলেও বাস্তবতা এমনই, যার উঠোন দিয়ে পল্লীবিদ্যুতের খুঁটি ও বৈদ্যুতিক তার টানা হয়েছে,তাঁর ঘরে এখনো অন্ধকার।
বিদ্যুতায়নের ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও এসব পরিবার নির্ভর করছে সৌরবিদ্যুতের টিমটিম আলো, মোমবাতি কিংবা হ্যারিকেনের ওপর। বর্ষাকালে সৌরবিদ্যুৎ অকার্যকর হয়ে গেলে ভরসা কেবল কুপি বাতির ক্ষীণ আলো।
এই ছয়টি পরিবার টিনশেড ও আধাপাকা ঘরে বসবাস করছেন। বিদ্যুতায়নের কিছুদিন পর তাঁরা এখানে ঘর তুলে বসতি গড়েছেন।
আশপাশের বিদ্যুতায়িত ঘরগুলোর সঙ্গে তাদের দূরত্ব মাত্র ৫০-৬০ মিটার হলেও এক লাইনেই থাকা খুঁটি ও তার থেকেও তারা বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি।
এতে প্রশ্ন উঠেছে বিদ্যুৎ সংযোগে ন্যায্যতা ও প্রশাসনিক তদারকি নিয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা বজলুর রহমান বলেন,‘৬-৭ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি আর পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে ঘুরছি। কেউ কথা রাখেনি। একবার কিছু লোক এসে বলল, দেড়-দুই লাখ টাকা দিলে সংযোগ পাওয়া যাবে। এত টাকা গরিব মানুষ দেব কোথা থেকে?’
অন্য বাসিন্দা হনুফা বেগম বলেন, ‘আমাদের উঠোন দিয়েই খুঁটি গেছে, তারও গেছে, কিন্তু আলোটা ঘরে ঢোকেনি। সন্ধ্যার পর শিশুদের নিয়ে অনেক কষ্ট হয়।’
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী খাদিজা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়,‘পাশের ঘরে বিদ্যুৎ আছে, অথচ আমাদের ঘরে নেই। প্রচণ্ড গরমে ঘুমাতে পারি না, ঠিকভাবে পড়তেও পারি না।’
এই অব্যবস্থাপনার বিষয়ে দোয়ারাবাজার পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) আব্দুর রহমান বলেন,‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তারা আবেদন করলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অরূপ রতন সিংহ বলেন,‘বিষয়টি সত্যিই বিস্ময়কর। আমি পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলব।’
স্থানীয়দের দাবি-যত দ্রুত সম্ভব এসব পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হবে, যাতে তারা দেশের অগ্রগতির ধারা থেকে পিছিয়ে না পড়ে।