
ছবি: সংগৃহিত।
সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ লোডশেডিং হচ্ছে। এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের পরপরই এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখছে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিস। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে এ দীর্ঘ লোডশেডিং কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার লাখো ভোক্তা।
উপজেলাবাসীর অভিযোগ, আকাশে কালো মেঘ দেখলেই যেমন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না, তেমনি মেঘমুক্ত দিনেও নিয়ম করে বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে। গত দুই দিন ধরে উপজেলার কুড়ারবাজার, মাথিউরা, তিলপাড়া, লাউতা, দুবাগ, শেওলা, মোল্লাপুর ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় দিনে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখছে বিয়ানীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস। সকাল ৬টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না।
দীর্ঘ সময় লোডশেডিং থাকায় স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি কষ্টে আছেন। পৌর শহরের ব্যবসায়ীরাও বিদ্যুৎ না থাকায় স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন না।
মোল্লাপুর ইউনিয়নের মোল্লাপুর গ্রামের গৃহবধূ সুহানা আক্তার সুমি বলেন, আগে দিনে এক-দুবার বিদ্যুৎ যেত। রাত ১২টার পর বিদ্যুৎ থাকত বলে ঘুমাতে পারতাম। এখন সেই সুযোগও নেই। বুধবার দিবাগত রাত ১২টায় বিদ্যুৎ এলেও মাত্র তিন ঘণ্টা ছিল, রাত ৩টায় আবার চলে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিদ্যুৎ একাধিকবার যাচ্ছে-আসছে।
ম্যড়িয়া ইউনিয়নের ছোটদেশ গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, লোডশেডিংয়ের একটি নির্দিষ্ট সময়সূচি থাকা উচিত। দিন-রাত মিলিয়ে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
একই ইউনিয়নের দিপা বেগম বলেন, চরম লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের পরিবারের শিশুরা জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। আমার ছেলেও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থার দ্রুত উন্নয়ন চাই।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পূরবী রাণী দাস বলেন, গত ১০/১৫ বছরে এভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ কখনো দেখিনি। দিনে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের এজিএম এ.এফ.এম মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে লোডশেডিং বাড়ছে। তাপমাত্রা কমে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’
তবে এক ঘণ্টা পর পর লোডশেডিং দেওয়ার যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তিনি।