মধ্যপ্রাচ্য
মার্কি*ন ঘাঁটিতে সমঝোতার হা*মলা: ইরানের দুর্বল প্রত্যাঘাত, ট্রাম্পের ধন্যবাদ বার্তা
ইরানের সাথে যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫ ০৩:৫৩

ছবি: ইমজা নিউজ
কাতারে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের হামলা ছিল 'নিয়ম রক্ষার'। হামলার আগে তেহরান ওয়াশিংটন সমঝোতার পর অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় ইরান। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই তা জানিয়েছেন।
সোমবার (২৩ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার পর ইরান কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে ১৪টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। তবে এই হামলা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত ও সমন্বিত। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট দিয়ে জানান, হামলার আগেই তেহরান যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছিল, যার ফলে কোনো প্রাণহানি বা উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ট্রাম্প লিখেন, 'ইরান তাদের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসের পর আনুষ্ঠানিকভাবে খুবই দুর্বল প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, যা আমরা আশা করেছিলাম এবং আমরা খুব কার্যকরভাবে এর জবাব দিয়েছি। ১৪টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৩টি প্রতিহত করা হয়েছে এবং ১টি ক্ষেপণাস্ত্র হুমকিহীন স্থানে আঘাত হানায় সেটি ‘মুক্ত’ রাখা হয়েছিল।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে কোনো আমেরিকানের ক্ষতি হয়নি এবং ক্ষয়ক্ষতিও খুবই কম হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে—তারা তাদের সিস্টেম থেকে সবকিছু বের করে ফেলেছে। আশা করি, আর কোনও ঘৃণা থাকবে না।'
এদিকে একই পোস্টে ট্রাম্প ইরানকে ধন্যবাদ জানান আগাম তথ্য দেওয়ার জন্য। তিনি লিখেছেন, 'আমি ইরানকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, হামলা সম্পর্কে আমাদের আগে থেকেই অবহিত করার জন্য, যার ফলে প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। সম্ভবত ইরান এখন এই অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতির দিকে এগিয়ে যেতে পারে এবং আমি ইসরায়েলকে একই পথে চলতে উৎসাহিত করব।'
এর আগে গত শুক্রবার রাতে ইরানের ফোর্দোসহ তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। সেই হামলার জবাব দিতেই ইরান কাতারে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় বলে জানালেও, ট্রাম্পের বক্তব্যে ইঙ্গিত মেলে যে, ওই হামলা ছিল মূলত প্রতীকী ও পূর্বসমঝোতার ভিত্তিতে পরিচালিত।
সূত্রমতে, ইসরায়েল যুদ্ধ থামানোর উদ্যোগ হিসেবে বিভিন্ন মধ্যপ্রাচ্য দেশকে ব্যবহার করে তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করে। তখন ইরান জানায়, যতক্ষণ না মার্কিন হামলার প্রতিশোধ নেওয়া হচ্ছে, যুদ্ধবিরতির আলোচনা তারা করবে না। এরপরই ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে পরোক্ষ সমঝোতা হয় এবং ইরানকে একটি প্রতিশোধাত্মক কিন্তু নিয়ন্ত্রিত আঘাত হানার সুযোগ দেওয়া হয়।
পুরো পরিস্থিতিকে ঘিরে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য বড় ধরনের সংঘাত এড়াতেই দুই দেশ ‘সীমিত সংঘর্ষে’ সম্মত হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েল - ইরান যুদ্ধ বন্ধের ইসয়েলের প্রেরিত প্রস্তাবে সায় দেয়নি ইরান। দু-একদিনের মধ্যের এই যুদ্ধের সমজোতার জন্য দুপক্ষ পরোক্ষ আলোচনায় বসতে পারে। এতে গাজা ও হামাস ইস্যুও আলোচনায় আসতে পারে বলে কুটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ইরান চাইবে গাজা যুদ্ধের স্থায়ী সমাধান। এক্ষেত্রে আমেরিকা-রাশিয়া-চীন মূখ্য ভুমিকায় দেখা যেতে পারে বলে আন্তর্জাতিক গনমাধ্যম আলজাজিরা, স্কাই নিউজ, ফক্স নিউজ আলাদা আলাদা খবর প্রকাশ করেছে।