
ছবি: ইমজা নিউজ
সিলেট নগরীর উপকণ্ঠে দলদলি চা-বাগানের ১১ জন চা-শ্রমিক পরিবারের সন্তান এ বছর এসএসসি পাশ করে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও ভর্তি ফি’র অভাবে তাদের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যাচ্ছিল। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ছিল ভর্তির শেষ তারিখ। ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কেউই ভর্তি ফি’র টাকা জোগাড় করতে পারেনি।
ঠিক সেই সময় বিষয়টি সংবাদমাধ্যম ইমজা নিউজ-এ প্রকাশ পেলে পাল্টে যায় পরিস্থিতি। ১০ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর একে একে এগিয়ে আসেন বিভিন্ন সংগঠন, প্রবাসী দানবীর ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাদ জুমা সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর মো. ফখরুল ইসলাম দলদলি চা-বাগানে উপস্থিত হয়ে ভর্তি সহায়তার অর্থ হস্তান্তর করেন। স্থানীয় মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সুস্মিতা দাসকে দেওয়া হয় ৮ হাজার টাকা এবং বাকি ১০ জন শিক্ষার্থীকে ৬ হাজার টাকা করে নগদ প্রদান করা হয়।
এসময় মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, “এ ধরণের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রণোদনা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু স্থায়ী কোনো সহযোগীতা নীতিমালা না থাকায় তারা বঞ্চিত হচ্ছে ন্যায্য অধিকার থেকে। আমরা চাই এসব মেধাবী শিক্ষার্থীরা সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পদ হয়ে উঠুক।”
তিনি সংবাদমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে এই সম্ভাবনাময় সন্তানদের স্বপ্ন বাঁচাতে আমরা এগিয়ে আসতে পেরেছি।”
সহায়তার টাকা হাতে পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন জিপিএ–৫ প্রাপ্ত সুস্মিতা দাসসহ অন্য শিক্ষার্থীরা: সীমানা নায়েক, শ্রাবন্তী দাস, ঝর্ণা নায়েক, শ্রীমা মুন্ডা, অন্তরা দাস, অজিত রাম গঞ্জু, শিল্পীমনি গঞ্জু, শাওন কুর্মী, মনে তুলি দাস ও রিপন দাস। তারা জানান, সমাজ তাদের শিক্ষার জন্য যে আন্তরিকতা দেখিয়েছে, তার প্রতিদান দিতে তারা আরও ভালোভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান।
উল্লেখ্য, এই শিক্ষার্থীরা সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ, মদনমোহন কলেজ ও সৈয়দ হাতিম আলী কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ভর্তি সহায়তায় শুধু জামায়াতে ইসলামী নয়, আরও দুইটি এনজিও এবং বেশ কয়েকজন দেশি-বিদেশি দানবীর হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা ও তাদের পরিবার সকল সহায়তাকারী সংগঠন ও ব্যক্তির প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।