
ছবি: সংগৃহীত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি দাবি করেছেন, প্রসূতি মহিলাদের জন্য ব্যথানাশক ওষুধ টাইলেনল (প্যারাসিটামল) অটিজমের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।
তিনি বলেছেন, প্রসূতি মহিলাদের এই ওষুধটি `প্রয়োজন ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়' এবং কেবল তীব্র জ্বরের ক্ষেত্রে নেওয়া উচিত।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রিটিং মন্তব্য করেছেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে ডাক্তারদের ওপর বিশ্বাস করি।’
এদিকে আমেরিকান কলেজ অব অবস্টেট্রিশিয়ানস অ্যান্ড গাইনোকলজিস্টরা ট্রাম্পের দাবির বিরোধিতা করেছেন।
কলেজের সভাপতি ড. স্টিভেন ফ্লেইশম্যান বলেন, ‘টাইলেনল সম্পর্কিত এই দাবিটি বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত নয় এবং এটি শিশুদের স্নায়ুবিক সমস্যার জটিল কারণকে অত্যন্ত সরলভাবে উপস্থাপন করছে।’
ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) জানিয়েছে, প্রসূতি মহিলাদের জন্য টাইলেনল এখনও নিরাপদ ওষুধ এবং জ্বর ও ব্যথা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। যদিও টাইলেনল ও অটিজমের মধ্যে কিছু গবেষণা আছে, সুনির্দিষ্ট কারণ-প্রমাণ এখনো স্থাপিত হয়নি।
ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্য সচিব রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র জানিয়েছেন, এফডিএ এই ওষুধের নিরাপত্তা লেবেল পুনঃমূল্যায়ন এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি প্রচারণা চালাবে।
হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, টাইলেনল ব্যবহার করা প্রসূতি মহিলাদের সন্তানদের মধ্যে অটিজম বা অন্যান্য স্নায়ুবিক বিকাশজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা বেশি হতে পারে। তবে ২০২৪ সালে সুইডেনে ২৪ লাখ শিশুর ওপর করা আরেকটি গবেষণা কোনো সরাসরি সম্পর্ক প্রমাণ করতে পারেনি।
ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মনিক বোথা বলেছেন, ‘কোনো দৃঢ় প্রমাণ নেই যে টাইলেনল সরাসরি অটিজমের কারণ।’
ন্যাশনাল অটিস্টিক সোসাইটি ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘দায়িত্বহীন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং বলেছে, এতে অটিস্টিক ব্যক্তিদের প্রতি অবমূল্যায়ন প্রকাশ পায়।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, অটিজম একটি জটিল ব্যাধি এবং এর একক কারণ খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। ২০০০ সালের পর থেকে অটিজমের নির্ণয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২০ সালে ৮ বছরের শিশুদের মধ্যে এটি ২.৭৭% পর্যন্ত পৌঁছেছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এর মধ্যে কিছুটা বৃদ্ধির কারণ হলো অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা এবং রোগের সংজ্ঞার সম্প্রসারণ।