ঐকমত্য কমিশন
সব বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন ও হাইকোর্ট বেঞ্চ নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫ ২১:২৪

বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী পরিবারের মতামত নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ বিষয়ে দেশের সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের নবম দিনের আলোচনায় এই ঐকমত্য গড়ে ওঠে। আলোচনাশেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, 'আজকের আলোচনায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন সম্পর্কিত সংবিধানের ৪৯নং অনুচ্ছেদ এবং বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ নিয়ে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে সুস্পষ্ট ঐকমত্য হয়েছে।'
অধ্যাপক রীয়াজ জানান, অতীতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে- এমন অভিজ্ঞতা থেকে রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছে। সংশোধিত প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে- 'রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা প্রয়োগ আইনে নির্ধারিত মানদণ্ড, নীতি ও পদ্ধতি অনুসরণ করে করতে হবে। এতে ভুক্তভোগী পরিবারের মতামত নেওয়ার বাধ্যবাধকতা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।'
তিনি আশা প্রকাশ করেন, সংবিধানের ৪৯নং অনুচ্ছেদ সংশোধন সংক্রান্ত প্রস্তাব কমিশনের ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’-এর মাধ্যমে বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে এই ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করা সম্ভব হবে।
বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ সম্পর্কেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক রীয়াজ।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান আসন রাজধানীতে থাকলেও প্রতিটি বিভাগীয় শহরে প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধানে এক বা একাধিক স্থায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ থাকবে। এ বিষয়ে সংবিধানের ১০০নং অনুচ্ছেদ সংশোধনের বিষয়েও ঐকমত্য গঠিত হয়েছে।
এদিন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রণয়নের লক্ষ্যে দেশের ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দলের মধ্যে ছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি।
কমিশনের পক্ষ থেকে আগামী ৭ জুলাই পুনরায় আলোচনার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ পর্যন্ত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংবিধানের ৭০নং অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা-সম্পর্কিত বিধান এবং বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়ে আলোচনা নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হয়েছে।