ছবি: ইমজা নিউজ
হকার উচ্ছেদ, ব্যাটারী চালিত রিকশা চলাচল বন্ধসহ শহরের নানা শৃঙ্খলা ফেরানোর ইস্যুতে হার্ডলাইনে সকল পক্ষ। ক্রমেই সে কার্যক্রম হয়ে উঠছে চ্যালেঞ্জিং। পরিবহন নেতৃবৃন্দও দিয়েছে নতুন আল্টিমেটাম। এর ফাঁকে পুলিশ ব্যাটারিচালিত রিকশার অধিকার আদায়ের আন্দোলনের দুই বাম নেতাকে আটক করেছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে সিলেট নগরীর আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে বাসদ সিলেট জেলার আহ্বায়ক আবু জাফর ও সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পালকে ডিবি পরিচয়ে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের সিলেট কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের হওয়া দুই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এসএমপি’র উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সাইফুল ইসলাম।
এদিকে নগরীর আবর্জনা সরাতে সকালে কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ঝাড়ু হাতে নেমেছিলেন সিলেটের জেলাপ্রশাসক মো. সারওয়ার আলম। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, সিলেটে যে সময়টুকু থাকবেন পুরা সময় সিলেট নগর ও জেলাবাসীর কল্যানে ব্যয় করবেন।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি প্রদানের দাবিতে সমাবেশে যোগ দেন এ দুই নেতা। গ্রেপ্তারের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাসদ নেতা নাজিকুল ইসলাম রানা বলেন, সম্পূর্ণ ভুয়া মামলায় আমাদের নেতাদের আটক করা হয়েছে। যেদিনের ঘটনায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সেদিন কমরেড আবু জাফর ঢাকায় কনফারেন্সে অংশ নিচ্ছিলেন, যেখানে সরকারের দুই উপদেষ্টাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় কোর্ট পয়েন্টে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বলেন, বৈধ যানবাহন এবং চালকদের উপর অবৈধ টমটম ও ইঞ্জিনচালিত রিকশা শ্রমিকদের হামলা ও ভাঙচুর নগরের পরিবহন ব্যবস্থার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংগঠনটির সভাপতি হাজী ময়নুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং নগরীর শান্তি বজায় রাখতে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
এদিকে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে সকাল ১১টায় আম্বরখানাস্থ কার্যালয় থেকে মিছিল বের হয়। সংগঠনের সিলেট নগরীর সভাপতি প্রণব জ্যোতি পাল জানান, এই কর্মসূচি কেন্দ্রীয় আন্দোলনের অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের জন্য প্রশাসনের কাছে অবহিতপত্র দিয়েছি এবং সহায়তাও চেয়েছি।’
হকার উচ্ছেদ অভিযানে শনিবার বিকেলে সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও অংশ নেন। এসময় তিনি ঘোষণা দেন, নগরবাসীকে সাথে নিয়ে আগামীকাল রোববার সকাল থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধেও আন্দোলনে নামবেন।
আরিফুল বলেন, নগরীর মানুষ শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদভাবে বসবাস করতে চায়। এ দাবির বিপরীতে যে কোনো রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী শক্তি কাজ করলে তার দাঁতভাঙা জবাব নগরবাসীকে দিতে হবে।
সিলেটের পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, শহরের শৃঙ্খলা ফেরানোই আমার প্রধান কাজ। ফুটপাতে হকার বসতে পারবে না, চলবে না ব্যাটারি চালিত কোনো পরিবহন। মানুষের কল্যাণে যা শক্তি প্রয়োগ লাগবে তাই ব্যবহার করা হবে।
