https://www.emjanews.com/

10421

international

প্রকাশিত

১২ অক্টোবর ২০২৫ ১১:২৪

আপডেট

১৩ অক্টোবর ২০২৫ ০১:২৬

আন্তর্জাতিক

গাজায় ফিরছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা,পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ হতে কয়েক প্রজন্ম সময় লাগবে

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ১১:২৪

ছবি: সংগৃহীত।

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর উত্তর গাজার বাস্তুচ্যুত হাজারো বাসিন্দা ধ্বংসস্তূপে পরিণত নিজ এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ইসরায়েলকে অবিলম্বে তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র (ক্যারাভান) সরবরাহের অনুমতি দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের আবাসন অধিকারবিষয়ক বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার বালাকৃষ্ণ রাজাগোপাল।

শনিবার আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজাগোপাল বলেন, উত্তর গাজার যেসব এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সরে গেছে, সেখানে ফিরে আসা ফিলিস্তিনিরা ‘ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পাচ্ছেন না’। তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধের মানসিক প্রভাব ও আঘাতের মাত্রা ভয়াবহ। উত্তর গাজায় ফিরে আসা মানুষদের মধ্যে সেই ভয়াবহতার চিত্র আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।’

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে গত শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে। এর পর থেকেই লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি ঘরে ফেরার চেষ্টা করছেন।

জাতিসংঘের হিসাবে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজার ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজার ৯২ শতাংশ আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। ফলে লক্ষাধিক মানুষ এখন তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয়ে বসবাস করছেন।

রাজাগোপাল জানান, চলতি বছরের শুরুর দিকে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয় পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু ইসরায়েলের কঠোর অবরোধের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তাঁর মতে, ‘গাজার প্রবেশপথগুলোর নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েল না ছাড়লে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো অসম্ভব।’

গাজার ধ্বংসযজ্ঞ বর্ণনা করতে গিয়ে রাজাগোপাল ‘ডোমিসাইড’ শব্দটি ব্যবহার করেন-যার অর্থ গণহারে মানুষের বাড়িঘর ধ্বংস করে বাস্তুচ্যুত করা। তিনি বলেন, “মানুষকে উচ্ছেদ করে একটি অঞ্চলকে বসবাসের অযোগ্য করে তোলা জাতিহত্যার মূল উপাদানগুলোর একটি। গাজায় ঘরবাড়ি ধ্বংস ইসরায়েলের গণহত্যার স্পষ্ট অংশ।’

রাজাগোপাল ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো জাতিগত নিধনের ঘটনাকে স্মরণ করে বলেন, ‘এ যেন আরেকটি নাকবা (বিপর্যয়)। গত দুই বছরে যা ঘটেছে, সেটি সেই নাকবারই পুনরাবৃত্তি।’

তিনি সতর্ক করে বলেন, গাজার পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ হতে কয়েক প্রজন্ম সময় লাগবে, যদি এখনই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সক্রিয় পদক্ষেপ না নেয়।