শাবিপ্রবিতে শাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের ধীরগতিতে শিক্ষার্থীরা হতাশ
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫ ১১:৩৩
ছবি: সংগৃহীত।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (শাকসু) নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন উৎসাহ বাড়ছে, তেমনি শঙ্কাও ঘনীভূত হচ্ছে। নভেম্বরের প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিলেও এখনো গঠন হয়নি নির্বাচন কমিশন। ফলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মনে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত, কিন্তু অগ্রগতি থমকে আছে
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের জুলাইয়ের প্রথমার্ধে শাকসুর গঠনতন্ত্র পুনঃপ্রণয়ন কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রায় তিন মাস পর, গত ৮ অক্টোবর চূড়ান্ত করা হয় নতুন গঠনতন্ত্র।
এর আগে ছাত্ররাজনীতি পুনরায় চালুর দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২২ সেপ্টেম্বর শর্ত সাপেক্ষে দলীয় ব্যানারে ছাত্ররাজনীতি চালুর অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপর থেকে শাকসু নির্বাচনের বিষয়ে আর কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
শিক্ষকদের অনলাইন বৈঠকে বিতর্ক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন-সংশ্লিষ্ট অন্তত পাঁচজন শিক্ষক ও কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় উপাচার্যের উদ্যোগে অনলাইনে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২০০ শিক্ষক এতে অংশ নেন।
সভায় উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি ও শাকসু নির্বাচন বিষয়ে শিক্ষকদের সহযোগিতা কামনা করেন। তবে বৈঠকের শেষ মুহূর্তে একজন শিক্ষক সভার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এতে কিছুক্ষণ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। কয়েকজন শিক্ষক পরামর্শ দেন, শাকসু নির্বাচনের বিষয়ে যৌক্তিক সময় নিয়ে ও সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। ফলে বৈঠকটি প্রত্যাশিত ফল বয়ে আনেনি।
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী, গত রোববারের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গঠন করে গঠনতন্ত্র হস্তান্তরের কথা ছিল। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। ফলে প্রশাসনের ধীর কার্যক্রম ও অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে নানা মন্তব্য ও সমালোচনা করছেন। অনেকে আশঙ্কা করছেন, এ গতিতে চললে ঘোষিত সময়সূচিতে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে না।
প্রশাসনের বক্তব্য
এ বিষয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য সাজেদুল করিম বলেন,‘নির্বাচনের কাজ স্থগিত হয়নি, বরং চলছে। আমরা সব পক্ষের সহযোগিতা চাই। শাকসু নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসন অঙ্গীকারবদ্ধ।’
গঠনতন্ত্র অনুমোদনের পরও শাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতিতে গতি না আসায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ আশাবাদী, প্রশাসন প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে; আবার অনেকেই আশঙ্কা করছেন, দেরি হতে হতে নির্বাচনই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
