
ইএন ডেস্ক।। ঘুম মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষঙ্গ। এটি শুধু শারীরিক শক্তি পুনরুদ্ধারে নয়, বরং মানসিক সুস্থতা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বজায় রাখতেও সহায়ক। ঘুমের অভাব দীর্ঘমেয়াদে নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার জন্ম দিতে পারে।
বয়সভেদে ঘুমের রয়েছে বিভিন্ন মাত্রা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও National Sleep Foundation-এর তথ্য অনুযায়ী, বয়স অনুযায়ী মানুষের ঘুমের প্রয়োজন ভিন্ন হয়ে থাকে। নিচে বয়সভেদে গড় ঘুমের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হলো:
বয়স প্রয়োজনীয় ঘুমের পরিমাণ (প্রতি দিন)
নবজাতক (০-৩ মাস) ১৪–১৭ ঘণ্টা
শিশু (৪-১১ মাস) ১২–১৬ ঘণ্টা
ছোট শিশু (১-২ বছর) ১১–১৪ ঘণ্টা
প্রাক-বিদ্যালয় বয়সী (৩-৫ বছর) ১০–১৩ ঘণ্টা
বিদ্যালয় বয়সী (৬-১৩ বছর) ৯–১১ ঘণ্টা
কিশোর (১৪-১৭ বছর) ৮–১০ ঘণ্টা
প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-৬৪ বছর) ৭–৯ ঘণ্টা
প্রবীণ (৬৫ বছর ও তদূর্ধ্ব) ৭–৮ ঘণ্টা
ঘুমের গুরুত্ব:
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি: ঘুম মস্তিষ্কের তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি স্মৃতিশক্তি উন্নয়নে সহায়তা করে।
মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা: পর্যাপ্ত ঘুম উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা: ঘুম শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় রাখে, ফলে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করা সহজ হয়।
হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়: যথাযথ ঘুম রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: ঘুম হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে যা ক্ষুধা ও বিপাকের ওপর প্রভাব ফেলে।
ঘুমের গুণগত মান:
পরিমাণের পাশাপাশি ঘুমের গুণগত মানও গুরুত্বপূর্ণ। গভীর ঘুম না হলে পরিমাণমতো ঘুম হলেও শরীর ঠিকভাবে বিশ্রাম পায় না। নিয়মিত ঘুমের সময় ঠিক রাখা, ঘুমানোর আগে মোবাইল বা স্ক্রিন এড়িয়ে চলা, আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করা- এসব ঘুমের মান উন্নয়নে সহায়ক।
ঘুম একটি মৌলিক জীবনীশক্তি, যা শরীর ও মনের সুস্থতা বজায় রাখতে অপরিহার্য। বয়স অনুযায়ী যথাযথ ঘুম নিশ্চিত করা এবং ঘুমের গুণগত মান বজায় রাখা সুস্বাস্থ্য, কর্মক্ষমতা এবং দীর্ঘায়ুর অন্যতম পূর্বশর্ত। তাই প্রতিদিনের জীবনে ঘুমকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
ইএন/এআর।