
ছবি: সংগ্রহ
মাতৃকালীন ও কৈশোর প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সিলেটের চা বাগান এবং পাত্র সম্প্রদায়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমিউনিটি হেলথ ওয়ার্কারদের সাথে সিলেটের পরিবার পরিকল্পনায় কাজ করা বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৮ জুলাই) বেলা ১২টায় পরিবার পরিকল্পনা জেলা অফিসে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেটের চা বাগান এবং পাত্র সম্প্রদায়ের মাতৃ ও কৈশোর প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নত করা প্রকল্পের আওতায় এথনিক কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (একডো) এই সভার আয়োজন করে।
সভায় পরিবার পরিকল্পনার বিভিন্ন সেক্টরের দায়িত্বশীল প্রতিনিধি, চা বাগান এবং পাত্র সম্প্রদায়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমিউনিটি হেলথ ওয়ার্কার ও চা শ্রমিকরা তাদের কার্যক্রম ও সমস্যার কথা আলোচনা করেন।
আয়োজকরা জানান, সিলেটের চা বাগানের নারী চা-শ্রমিকরা ন্যুনতম স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। তবে মাতৃকালীন স্বাস্থ্যসেবা থেকে যেন তারা বঞ্চিত না হন সেজন্য আইপাস বাংলাদেশের সহযোগিতায় সিলেটের টুকেরবাজার ও খাদিমনগর ইউনিয়নের চা বাগান এবং পাত্র সম্প্রদায়ের ২৫ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত স্বাস্থ্যসেবীদের সাথে মাঠ পর্যায়ে থাকা পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের সাথে সমন্বয় করা, পরিবার পরিকল্পনার অন্যান্য সেবা সম্পর্কে অবহিত করতে এই মতবিনিময় সভা করা হয়েছে।
সভায় পরিবার পরিকল্পনার বিভিন্ন সেক্টরের দায়িত্বরা নিজেদের অনেক সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে জানান, সিলেটে ১১টি চা বাগানে ২২ জন স্বাস্থ্যসেবী দরকার। কিন্তু আছেন মাত্র তিনজন। জনবল অনেক কম পাশাপাশি অন্যান্য এলাকার মত চা বাগানে গিয়ে সেবা দিতে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই চা শ্রমিকরা যেন সঠিক সেবা পান এজন্য সরকারি বেসরকারি সবার সমন্বয় দরকার। এবং চা শ্রমিকদের সচেতন করা দরকার।
একডো'র নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপ পরিচালক মো. নিয়াজুর রহমান।
পরিবার পরিকল্পনার বিভিন্ন কার্যক্রম উপস্থাপনা করেন ও এ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নে উত্তর দেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী পরিচালক বিশ্বজিত কৃষ্ণ চক্রবর্তী।
বক্তব্য দেন সিলেট সদর উপজেলা এমওএমসিএইচ ডা. সুবর্ণা রায় তুলি, আইপাস বাংলাদেশের সমন্বয়কারী মো, বুরহান মৃধা, সিলেট সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল মনসুর আসজাদ।
সিলেট জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপ পরিচালক মো. নিয়াজুর রহমান বলেন, পরিবার পরিকল্পনার স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে দেওয়া হয়। আমরা চাই চা শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে। এটা আমাদের দায়িত্ব আর আপনাদের অধিকার। সরকারের কাজ হলো জনগনের দ্বারগোড়ে সেবা পৌঁছে দেওয়া। এজন্য একটি মাধ্যম ও সেবা প্রয়োজন। একডো আপনাদের ও আমাদের মধ্যে সেই সমন্বয় তৈরি করতে সাহায্য করেছে। আজকে আপনারা আমাদের এখানে আসছেন এরপর আমি আপনাদের কাছে যাবো। আজকের আলোচনায় যে সিদ্ধান্ত হবে সেই অনুযায়ী কাজ করা হবে।
একডো'র নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ বলেন, চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীর জন্য মাতৃকালীন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা খুব বেশি প্রয়োজন। এই অন্যান্য সেক্টরের মত এখানেও তারা বঞ্চিত। তাই চা বাগান ও পাত্র সম্প্রদায়ের নারীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সচেতন করতে আইপাস বাংলাদেশের সহযোগিতায় আমরা তাদের কমিউনিটির নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এখন এই প্রশিক্ষণ যেন কাজে আসে সেজন্য পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের সাথে সমন্বয় করতে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছি।