শিরোনাম
‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতায় তরুণদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে’-নাহিদ ইসলাম ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট নিয়ে সংঘ*র্ষে প্রা*ণ গেল যুবকের, আহ*ত ১ র‍্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমনের বাবার ওপর হামলা থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার যুদ্ধ: এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সঙ্কট ৩ আগষ্ট ঢাকার সমাবেশ থেকেই জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করে নিবো: নাহিদ ইসলাম সিলেটে এনসিপি’র পদযাত্রা শেষ, সভা চলছে এনসিপি'র নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের শাবিপ্রবিতে উষ্ণ অভ্যর্থনা আমরা ফিটনেসবিহীন রাষ্ট্র রেখে যেতে চাই না: নাহিদ ইসলাম দক্ষিন সুরমায় এম এ মালিকের আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে ছিলেন না সিলেট বিভাগের কোন পদধারী নেতা জুলাই যুদ্ধ শেষ হয়নি: হবিগঞ্জে নাহিদ ইসলাম

https://www.emjanews.com/

7242

sports

প্রকাশিত

১৩ জুলাই ২০২৫ ২৩:৪০

আপডেট

১৪ জুলাই ২০২৫ ০০:৪৪

খেলাধুলা

জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে সিলেটের প্রতিপক্ষ সিলেট!

আজ শুরু ৩৯তম আসর।

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫ ২৩:৪০

গত আসরের চ্যাম্পিয়ন সিলেটের তানভীর ও গৌরব (ফাইল ছবি)

বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের আয়োজনে আজ (১৪ জুলাই) ঢাকার তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে ৩৯তম জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫।

ছয়দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে দেশের ৬৩টি জেলা ক্রীড়া সংস্থা, ৬টি বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা, ১০টি সার্ভিসেস সংস্থা, ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ৩টি শিক্ষাবোর্ড।

অংশগ্রহণকারিদের মধ্যে পুরুষ ৩৭২ জন ও নারী ৮৩ জন খেলোয়াড় একক, দ্বৈত ও মিক্স দ্বৈত ইভেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

তবে এবারের আসরে সিলেটের পারফরম্যান্স নিয়ে যেমন আগ্রহ আছে, তেমনি রয়েছে একরাশ ক্ষোভ ও হতাশা। কারণ, আগের বছরের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ এবার সিলেটের হয়ে অংশ নিচ্ছেন না। তাঁরা অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশ আনসার ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিসেস দলের হয়ে, যেটিকে অনেকেই ‘সিলেটের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে দেখছেন।

৩৮তম জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪-এ ডাবলসে সিলেটের তানভির ও গৌরব চ্যাম্পিয়ন এবং মিজান ও নাঈম রানারআপ হয়েছিলেন।

এছাড়া ৩৭তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হন মিজান-নাঈম জুটি। কিন্তু এবার তারা কেউই সিলেটের জার্সি গায়ে দিচ্ছেন না। তানভির ও গৌরব খেলছেন বাংলাদেশ আনসার দলের হয়ে এবং মিজান ও নাঈম খেলছেন পুলিশ সার্ভিস দলের পক্ষে।

এ পরিস্থিতি সিলেটের ক্রীড়াঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

সিলেটের একজন ব্যাডমিন্টন অনুরাগী জমশেদ আনোয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সারা বছর সিলেট স্টেডিয়ামে খেলে, এখানকার কোচদের প্রশিক্ষণে তারা তারকা হয়েছেন। এখন টাকার লোভে সিলেটের বিরুদ্ধে খেলছেন, এটা খুবই দুঃখজনক। ‘

সাবেক খেলোয়াড় আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘সিলেটের কোচ, মাঠ আর সাপোর্ট ছাড়া তারা আজ কিছুই হতেন না। অথচ এখন সিলেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এটা কৃতজ্ঞতার চরম অভাব।’

একজন খেলোয়াড়ের অভিভাবক রাজু সিংহ বলেন, ‘এটা সিলেটের ক্রীড়াঙ্গনে খারাপ বার্তা দিচ্ছে। ভবিষ্যতের খেলোয়াড়রা অনুপ্রাণিত হওয়ার বদলে নিরুৎসাহিত হবেন।’

জেলা ক্রীড়া সংস্থার এ্যাডহক কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা মো. নূর হোসেন বলেন ‘বর্তমান চ্যাম্পিয়ান ও রানারআপরা সিলেটের হয়ে খেলছেন না। এটা অত্যন্ত দু:খজনক। আমরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে বারবার কথা বলেও তাদেরকে রাজী করাতে পারিনি। সিলেট ক্রীড়া সংস্থার প্রতি তাদের কোন দায় নেই। সিলেটের হয়ে খেলার জন্য আমাদের সভাপতি মহোদয়সহ সবাই তাদেরকে অনুরোধ করেছি। তারা রাজি হননি। তাদের ব্যয়ভার বহন করার কথাও জানানো হয়েছিল।’

জেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির সদস্য ইয়াহইয়া ফজল বলেন, ‘রানিং চ্যাম্পিয়ান রানারআপ জানিয়েছেন তারা বছর খানেক আগে আনসার ও পুলিশের সাথে চুক্তি করে ফেলেছেন। তবে সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে অবগত না করে তাদের এই চুক্তিকে সমর্থন করা যায় না।’ 

বিগত বছরগুলোতে জাতীয় চ্যাম্পিয়ান সালমান খান, দুলাল ও খালেদকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার হয়ে না খেলার কারণে সিলেট জেলা স্ট্যাডিয়ামে খেলা থেকে তাদেরকে বিরত রাখা হয়েছিল। বর্তমান চ্যাম্পিয়ান রানারআপদের বিষয়ে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন কিনা- এমন প্রশ্নে ইয়াহইয়া ফজল বলেন, ‘সিলেট ব্যাডমিন্টন কমিটির কোনো নীতিমালা নেই। একটা নীতিমালা তৈরি করতে হবে। না হলে সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থা আগামীতে কোনো খেলোয়াড় পাবে না।’

বর্তমান চ্যাম্পিয়ান তানভির ইমজা নিউজকে বলেন, ‘আমরা বছর খানেক আগে বাংলাদেশ আনসার দলের সঙ্গে চুক্তি করে ফেলছি । চুক্তির কারণে  এবার সিলেটের হয়ে খেলতে পারছি না। 

তিনি বলেন ‘ব্যাডমিন্টন ব্যয়বহুল খেলা। আমাদের জেলা ক্রীড়া সংস্থা বেতন দেয় না। সিলেটের মাঠ ব্যবহার করেছি বলে আমরা তাদের হয়ে খেলতে বাধ্য নই।’

চুক্তির আগে জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে অবগত না করার বিষয়ে বলেন, ‘কাকে অবগত করবো? তারা তো ফোনই ধরে না। আমাদের সাথে যা তা ব্যবহার করতো। নতুন কমিটির তারা আন্তরিক কিন্তু তারা দায়িত্ব নেওয়ার আগেই আমরা চুক্তি করে ফেলেছি।’

এবার সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার হয়ে কোচ প্রদীপ সিংহের অধীনে অংশ নিচ্ছেন রবিন-মাসুদ ও শ্যামল-পারভেজ জুটি। তারা ডাবলস এবং একক ইভেন্টে খেলবেন।

অন্যদিকে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার পক্ষে সাবেক জাতীয় কোচ শিব্বির আহমদের অধীনে খেলছেন ইফাজ, মারওয়ান, হিমাংশু ও বিশাল।

জাতীয় দলের সাবেক কোচ ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কোচ শিব্বির আহমদ বলেন, ‘সিলেট বরাবরই ব্যাডমিন্টনে শক্তিশালী ছিল। এবার কিছু সংকট আছে, তবে যারা অংশ নিচ্ছেন, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। আশা করি সম্মানজনক অবস্থানে যেতে পারবো।’

প্রসঙ্গত, ৩৮ তম বাংলাদেশ জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪ ডাবলসে বাংলাদেশ জাতীয় ডাবলস চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন সিলেটের গৌরব ও তানভীর। রানার্ আপ হয় মিজান ও নাঈম। ৩৭তম চ্যাম্পিয়ানশিপে ডাবলসে সিলেটের মিজান ও নাঈমও চ্যাম্পিয়ান হন।

এর আগে শ্যামল ও খালেদ, দুলাল ও খালেদ চ্যাম্পিয়ান হয়েছিল সিলেটের হয়ে। একক ইভেন্টে এনামুল হক এনাম একবার ও সালমান খান দুইবার চ্যাম্পিয়ান হন।