
ছবি: সংগৃহিত।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর পদযাত্রা ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও সহিংসতার পর শহরে কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন। এতে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
তবে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিতের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বুধবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, 'বৃহস্পতিবারের পরীক্ষা স্থগিতের কোনো সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি, গোপালগঞ্জ শহরের পরীক্ষা কেন্দ্রটি যেন কারফিউয়ের আওতার বাইরে থাকে। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।'
জানা গেছে, গোপালগঞ্জের পরীক্ষার্থীরা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দিয়ে থাকে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ভূগোল দ্বিতীয় পত্র এবং দুপুর ২টায় উচ্চাঙ্গ সংগীত, আরবি ও পালি প্রথম পত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। গোপালগঞ্জে এদিন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম বলে জানান বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।
এদিকে এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শহরে উত্তেজনা ছড়ায় মঙ্গলবার থেকেই। বুধবার সকাল থেকে সহিংসতা শুরু হয় পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে। পরে ইউএনওর গাড়িতে হামলা এবং আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের মিছিল থেকে সমাবেশস্থলে হামলার ঘটনা ঘটে।
দুপুরে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় ফের হামলা হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের সংঘর্ষে গোটা শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এসব ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুপুরে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। তবে সন্ধ্যা নাগাদ সহিংসতা না থামায় কারফিউ জারি করা হয়।
এই পরিস্থিতিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পুলিশের সহায়তায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে তারা এলাকা ত্যাগ করেন।
পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে আগামী পরীক্ষাগুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে শিক্ষা বোর্ড।
প্রশাসনের পক্ষ থেকেও পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।