
ছবি: সংগৃহিত।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
শনিবার (১৯ জুলাই) দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানান। পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের জরুরি সেবা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি তোলেন তাঁরা।
বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের বরাতে বলা হয়, ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতা ঘটে। এতে পাঁচজন নিহত হন এবং অন্তত ৫০ জন আহত হন, যাদের মধ্যে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ। বিবৃতিদাতারা এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সহিংসতা রোধে প্রশাসনের ব্যর্থতা রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সহিংসতার আগের দিন থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উত্তেজনাকর ও বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছিল। জেলা প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ বিষয়ে অবগত থাকার কথা থাকলেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি। ১৬ জুলাই সকালে পুলিশের গাড়িতে আগুন ও ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার পরও সমাবেশস্থলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
বিবৃতিতে বলা হয়, লাঠিসোঁটা ও অস্ত্রসজ্জিত একদল লোক এনসিপির সমাবেশে হামলা চালায়, অথচ পাশেই থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় ছিল। এরপর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায়, যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কিছু সশস্ত্র লোক ও বিক্ষুব্ধ জনতার সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে বেশ কয়েকজন মারা যান। আহত ৯ জনের চিকিৎসার তথ্যও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিদাতারা এসব ঘটনায় দায়িত্বে থাকা প্রশাসন ও নিরাপত্তাবাহিনীর ভূমিকা, গুলিবর্ষণের যৌক্তিকতা এবং কর্তব্যে অবহেলা ছিল কিনা, তা তদন্ত করে দেখতে বলেন।
তাঁরা গোপালগঞ্জের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা কামনা করেন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ড. ইফতেখারুজ্জামান, রাশেদা কে চৌধুরী, খুশী কবির, সারা হোসেন, সুব্রত চৌধুরী, অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, রোবায়েত ফেরদৌস, সামিনা লুৎফা, তাসনীম সিরাজ মাহবুব, শামসুল হুদা, জাকির হোসেন, মনীন্দ্র কুমার নাথ, রেজাউল করিম চৌধুরী, পাভেল পার্থ, সাইদুর রহমান, রেজাউর রহমান লেলিন, দীপায়ন খিসা, মিনহাজুল হক চৌধুরী, মুক্তাশ্রী চাকমা ও হানা শামস আহমেদ।