গোয়াইনঘাটে মাদ্রাসা শিক্ষকের নির্যাতনে ৯ বছরের শিশু গুরুতর আহত
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:৩৮
ছবি: সংগৃহীত।
সিলেটের গোয়াইনঘাটে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বেধড়ক পিটুনির শিকার হয়েছে নয় বছরের এক শিশুশিক্ষার্থী। ‘সবক’ (পাঠ) ঠিকমতো না দিতে পারায় সহকারী শিক্ষক তাকে অমানবিক নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই শিশুকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে, গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকরঘাট ইলিয়াস (রহ.) মাদ্রাসায়। অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজ হুজায়েল আহমদ ওই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। নির্যাতনের শিকার শিশুশিক্ষার্থী আবু তালহা গোয়াইনঘাটের তোয়াকুল ইউনিয়নের জাঙ্গাইল গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে।
শিশু আবু তালহার অভিযোগ, পড়া মুখস্থ না করতে পারায় শিক্ষক হুজায়েল আহমদ প্রথমে কয়েকটি জালি বেত একত্র করে তাকে মারধর করেন। এরপর তার মাথা চেয়ারের নিচে ঢুকিয়ে বেধড়ক প্রহার করেন। একপর্যায়ে শিশুটিকে শুইয়ে বুকের উপর পা দিয়ে চাপ প্রয়োগ করেন। কোনোরকমে ছাড়িয়ে পালানোর পর পাশের একটি বালুরটেকে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে শিশুটি।
অভিযোগ আরও পাওয়া গেছে, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ প্রথমে ঘটনাটি গোপন করার চেষ্টা করে। আবু তালহার মা জানান, ‘আমার ছেলেকে নির্যাতনের পর মাদ্রাসার দুইজন শিক্ষক আমাদের বাড়িতে এসে জানান, মাগরিবের নামাজের পর থেকে তালহা নিখোঁজ। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাংবাদিকসহ এলাকাবাসী খোঁজ শুরু করেন। অবশেষে সালুটিকরঘাট এলাকায় বালুরটেক থেকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।’
স্থানীয় চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসার পর গুরুতর আহত অবস্থায় শিশুটিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। বর্তমানে সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজ হুজায়েল আহমদ নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘তালহা দুষ্টুমি করেছিল। মুহতামীম সাহেবের নির্দেশে আমি তাকে কয়েকটি বেত্রাঘাত করেছি।’
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দ্রুত অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
