ফাইল ছবি
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাজী আব্দুল মন্নান মানাফ ও সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর জেলা বিএনপির শোকজের জবাবে লিখিতভাবে দাবি করেছেন, তাদের ‘স্বাক্ষর জাল’ করে পদস্থগিত সভাপতি সাহাব উদ্দিনের মুক্তি দাবিতে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
তাদের দাবি, এ বিষয়ে তারা কোনো কিছুই জানতেন না। এমনকি সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর জানিয়েছেন, বিবৃতি প্রকাশের দিন তিনি কোম্পানীগঞ্জে উপস্থিতও ছিলেন না। অপরদিকে সভাপতি মানাফ বলেন, ওই বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী জানান, যেহেতু উভয় নেতা বিবৃতি দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন, তাই বিষয়টি নিয়ে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, “আগামী দু’এক দিনের মধ্যে জবাবসহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে আইনি পরামর্শ চাইব। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই কোম্পানীগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত অভিযুক্তদের জানিয়ে দেওয়া হবে।”
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাজি আব্দুল মন্নান মানাফ ও সাধারণ সম্পাদক আলী আকবরকে শোকজ নোটিশ দিয়েছিল জেলা বিএনপি। তিন দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছিল তাদের।
জেলা বিএনপির সভাপতি বলেন, “দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক যে নেতার সব ধরনের পদ-পদবি স্থগিত করা হয়েছে, তার মুক্তির দাবিতে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে বড় ধরনের গর্হিত কাজ হয়েছে। শোকজের জবাব পাওয়ার পর হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে কোম্পানীগঞ্জে সাদাপাথর লুটের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সাহাব উদ্দিনের মুক্তি দাবি করা হয়। অথচ কেন্দ্রীয় বিএনপি গত ১১ আগস্ট তাকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেয়।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট নগরী থেকে র্যাব-৯ সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। তিনি ভোলাগঞ্জ এলাকার মৃত আ. বারীর ছেলে এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। সাদা পাথর লুটে ‘মাস্টার মাইন্ড’ হিসেবে নাম আসার পর তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কোম্পানীগঞ্জ ও কোতোয়ালী থানায় তার বিরুদ্ধে সাতটি মামলা রয়েছে।
গত এক বছরে ভোলাগঞ্জ এলাকায় ব্যাপক সাদাপাথর উত্তোলনের ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনা তৈরি হয়। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর দায়ীদের গ্রেপ্তারে র্যাব-৯ বিশেষ গোয়েন্দা অভিযান শুরু করে। পরে ১৫ আগস্ট কোম্পানীগঞ্জ থানায় খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন ১৯৯২ এর ৫ তৎসহ দণ্ডবিধি ৩৭৯/৪৩১ ধারায় মামলা দায়ের হয়, যেখানে অন্যতম মূল আসামি সাহাব উদ্দিন।
