মৌলাটিকর গ্রামে ১০ পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে একটি চক্র
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৮
ছবি: সংগ্রহ
সিলেট সদর উপজেলার চাতল মৌলাটিকর গ্রামে ১০ পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় রাজিয়া বেগম ও তার সহযোগীরা। শুধু তাই নয়, উল্টো ওই পরিবারের সদস্যদের চরিত্রহননের জন্য মিথ্যা অভিযোগ ও কাল্পনিক ঘটনা সাজাচ্ছেন তিনি এমন অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন গ্রামের আব্দুল মছব্বিরের ছোট ভাই আহমদ আলী হেলাল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, চাতল বাজার সংলগ্ন তাদের বাড়ির রাস্তা মৃত আব্দুস শহীদের বাড়ির পিছন দিয়ে চলে গেছে। এই রাস্তা দিয়েই তাদের ১০ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করে আসছেন। রাস্তাটি প্রশস্ত করতে ২০১৩ সালে রাজিয়া বেগমের কাছ থেকে দুই শতক জমি ক্রয় করেন তার ভাই রফিক আহমদ ও ভাতিজা তোরাব আলী। এরপর চলতি বছরে একই এলাকার আরেক জমির মালিক মৃত শায়েস্তা মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম ও ছেলে রাব্বির কাছ থেকে আরও দুই শতক জমি কেনেন তার ভাই আব্দুল মছব্বিরসহ পাঁচজন। মোট চার শতক জমি ক্রয়ের মাধ্যমে রাস্তা প্রায় ১৪ ফুট প্রশস্ত হয় বলে দাবি করেন তিনি। অভিযোগে তিনি আরও জানান, গত ৪ জুলাই হঠাৎ রাজিয়া বেগম দলবলসহ ওই সড়কে জোরপূর্বক পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করেন। স্থানীয়রা বাধা দিলে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সহায়তায় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন তিনি। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শান্তি বজায় রাখার নির্দেশ দিলেও তা উপেক্ষা করা হয়।
পরে ৫ জুলাই ও ৩১ জুলাই এ ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানায় জিডি এবং আদালতে ১৪৫ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। আদালতে জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, ক্রয় করা জমিতে রাজিয়া বেগম ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক স্থাপনা নির্মাণ করছেন। কিন্তু ২৯ আগস্ট আবারও পুলিশের নির্দেশ অমান্য করে তারা একই ভুমিতে ঘর নির্মাণ শুরু করলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আব্দুল মছব্বির, তার স্ত্রী দিলারা বেগম, ভাতিজা তাহসিন ও জুবের আহমদ গুরুতর আহত হন। পরে তাদেরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানায় রাজিয়া বেগম, তার ছেলে তানজিন আহমদ, ভাই মাসুক মিয়া, স্বামী নাজিম উদ্দিনসহ ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু এর বিপরীতে রাজিয়া বেগমও পাল্টা মামলা দায়ের করেন, যা পুলিশ রেকর্ড করেছে। অভিযোগকারীরা জানান, বর্তমানে তাদের পরিবারের সব পুরুষ সদস্য এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
অন্যদিকে আসামিরা এলাকায় বহাল তবিয়তে অবস্থান করছেন। আহমদ আলী হেলাল বলেন, “আমরা কখনো ঈদগাহের রাস্তা বন্ধ করিনি। বরং আমাদের জমি ও নিজস্ব সড়ক দিয়েই গ্রামের মানুষকে ঈদগাহে যাতায়াতের সুযোগ করে দিয়েছি। রাজিয়া বেগমের ছেলে তানজিন আহমদকে মারধর বা টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মনগড়া।” তিনি প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং প্রকৃত ঘটনা তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামের প্রবীণ মুরুব্বি ইউসুফ মিয়া, গুলাবনুর, আব্দুল খালিদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
