https://www.emjanews.com/

9998

sylhet

প্রকাশিত

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৩৯

আপডেট

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২২:১৬

সিলেট

শনিবার নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের বড় শো-ডাউন

বৃহস্পতিবারের নাশকতা অনুপ্রেবেশকারীরা ঘটিয়েছে

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৩৯

ছবি: রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের লিফলেট।

সিলেট নগরীতে আগামীকাল শনিবার বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা। ৮ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সকাল ১১টায় আম্বরখানাস্থ সংগঠনের কার্যালয় থেকে মিছিল শুরু হবে। এ কর্মসূচি কেন্দ্রীয় আন্দোলনের অংশ বলে জানিয়েছে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ।

রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের সিলেট নগরীর সভাপতি প্রণব জ্যোতি পাল জানান, এ কর্মসূচির জন্য গত ২৪ সেপ্টেম্বর এসএমপির বরাবরে কর্মসূচির অবহিতপত্র দাখিল করা হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের জন্য প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছি।

এ সময় তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবারের কর্মসূচিতে দাঙ্গা ও নাশকতা ছড়ানোর জন্য শ্রমিকরা দায়ী নয়। এতে কিছু নাশকতাকারী শ্রমিকদের সঙ্গে মিশে ইচ্ছাকৃতভাবে এ নাশকতা সৃষ্টি করেছে।’

প্রশাসনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে নাশকতা সৃষ্টিকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

সংগঠনের নেতারা জানান, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সারাদেশের প্রায় ৬০ লক্ষ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নিবন্ধন, চালকদের লাইসেন্স, রুট পারমিট ও প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য একটি অভিন্ন ও সমন্বিত নীতিমালা বাস্তবায়নের দাবিতে তারা আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। ২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক আদেশে মহাসড়ক ছাড়া সব সড়কে এসব যান চলাচলের অনুমতি মেলে। এরপর ২০২৪ সালে ঢাকায় চলাচল বন্ধে সরকারি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেও আন্দোলনের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

তারা অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ইতিমধ্যেই ‘বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২৫’ প্রণয়নের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। অথচ গত ২৮ আগস্ট আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন সংশোধন করে ২০২৫ সালের ৪৫ নং অধ্যাদেশ জারি করেছে। এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ব্যাটারিচালিত রিকশার নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ সিটি কর্পোরেশনের হাতে যাবে।

সংগ্রাম পরিষদের দাবি, সিটি কর্পোরেশনের এমন কারিগরি দক্ষতা বা জনবল নেই। এ সিদ্ধান্ত চালক ও শ্রমিকদের স্বার্থবিরোধী।

তারা মনে করেন, সরকারঘনিষ্ঠ কয়েকটি কোম্পানিকে বাজার দখলের সুযোগ করে দিতেই তড়িঘড়ি করে এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এতে করে বিদ্যমান ৬০ লক্ষ যানবাহন বাতিল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং চালকেরা কয়েকটি কোম্পানির কাছে জিম্মি হয়ে পড়বেন।

৮ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন সংশোধন করে জারি করা অধ্যাদেশ নং ৪৫/২০২৫ অবিলম্বে বাতিল, বিআরটিএ’র অধীনে সারা দেশে নিবন্ধন, লাইসেন্স, রুট পারমিট ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, দেশীয় কারখানায় প্রস্তুত যানবাহন নতুন ডিজাইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে দুই বছরের পরিকল্পনা নিতে হবে, কোনো সিন্ডিকেট বা নির্দিষ্ট কোম্পানিকে অগ্রাধিকার না দেওয়া, স্থানীয় উৎপাদকদের সুযোগ সৃষ্টি, পরিবেশবান্ধব ব্যাটারি ব্যবহারে ভর্তুকি দিয়ে লিথিয়াম ব্যাটারির প্রসার ও সোয়াপিং বুথ স্থাপন, প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেন নির্মাণ এবং আটক যানবাহন দ্রুত মুক্তি ও রেকার বিল কমানো।

এর আগে বৃহস্পতিবার নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল করে। ওই সময় ভাঙচুর ও নাশকতার ঘটনাও ঘটে।

অন্যদিকে, এ আন্দোলনে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলমের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের পক্ষে দরকষাকষি করতে দেখা গেছে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরীকে। তার সঙ্গে মহানগর বিএনপি, যুবদল ও শ্রমিক দলের নেতারাও ছিলেন।

এ বিষয়ে এমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাদের অনুরোধে তিনি শুধু জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছেন। এর বেশি তার আর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে শনিবারের কর্মসূচি সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই।’

রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পৃক্ততা এবং ৮ দফা দাবি ঘিরে নগরীতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আগামীকালকের শোডাউনে পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তা নিয়ে ব্যবসায়ীমহলসহ সাধারণ মানুষও উদ্বিগ্ন হয়ে আছে।