
ছবি- গুগল
আজ ২৮ জুন বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের কিংবদন্তি শিল্পী ফেরদৌসী রহমান ৮৫ বছরে পদার্পণ করলেন।
গানের সঙ্গে যার জীবন মিশে আছে ছোটবেলা থেকেই, সেই ফেরদৌসী রহমানের জন্ম ১৯৪১ সালে ভারতের কোচবিহারে। তিনি পল্লীগীতির সম্রাট আব্বাসউদ্দীনের কন্যা এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামালের ছোট বোন।
জন্মদিন নিয়ে কখনোই খুব একটা উৎসাহী ছিলেন না ফেরদৌসী রহমান। তবে ১৯৫৬ সালে ম্যাট্রিকে সারা দেশের মধ্যে মেয়েদের মধ্যে প্রথম হওয়ার পরই তাঁর জন্মদিন প্রথম উদ্যাপন করা হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে পরিবার ও কাছের মানুষদের ভালোবাসায় জন্মদিন হয়ে উঠেছে বিশেষ একটি দিন।
এ বছর জন্মদিন এসেছে ভিন্ন এক আবেগ ও শূন্যতা নিয়ে। গত এক বছরে তিনি হারিয়েছেন জীবনের তিনজন আপনজন- স্বামী রেজাউর রহমান, ভাই সংগীতজ্ঞ মুস্তফা জামান আব্বাসী এবং ভাবি আসমা আব্বাসী।
স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, 'আমার স্বামী নীরবে জন্মদিন পালন করতেন। আর ভাই ও ভাবি কেক, ফুল নিয়ে আসতেন। এবার তিনজনেই নেই। খুব মন খারাপ হয়।'
বয়স নিয়ে তিনি বলেন, 'মা বেঁচেছিলেন ৯০ বছর, ফুফু ৯৪-এর বেশি। ভেবেছিলাম আমার বয়স ৬০-৭০ হবে। এবার ৮৫-তে পা দিলাম, কীভাবে যে সময় চলে গেল, টেরই পাইনি।'
জীবন নিয়ে তাঁর দার্শনিক এক উপলব্ধি- 'যদি কেউ জীবনকে সুখ হিসেবে দেখে, তাহলে সেটা উদ্যাপনের। কেউ যদি দুঃখ হিসেবে দেখে, তাহলে সেটা পানিশমেন্টের মতো। আমার কাছে জীবনটা সুখ-দুঃখের মিশ্রণ। কারও জীবনে সুখ বেশি, কারও দুঃখ কিছুটা বেশি। কিন্তু জীবনকে ভালোবাসতে জানতে হয়।'
প্রবীণ এই সংগীতশিল্পী এখনো কৃতজ্ঞতা নিয়ে বেঁচে আছেন এবং প্রতিটি দিনকে সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে বাড়তি উপহার মনে করেন। জীবনের এই অধ্যায়েও তাঁর কণ্ঠে ঝরে পড়ে শান্তি, গভীরতা আর প্রজ্ঞার সুর।