বাংলাদেশে পুশ ব্যাক করতে বিমানে ২০০ জনকে সীমান্তে এনেছে ভারত
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫ ০১:২৫

ভারতের গুজরাট রাজ্যে বসবাসরত দুই শতাধিক মানুষকে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) তাদের একটি বিশেষ সামরিক বিমানে করে উত্তর-পূর্ব ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে স্থানান্তর করা হয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এসব ব্যক্তিকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা শেষ পর্যন্ত পুশইনের মাধ্যমে সম্পন্ন হতে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এর খবরে বলা হয়, আটক ২০০ জনকে প্রথমে গুজরাটের বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে শনাক্ত করা হয়। এরপর তাদের অস্থায়ী বন্দিশিবিরে রাখা হয় এবং পরে বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে কড়া নিরাপত্তায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাদের সীমান্ত রাজ্যগুলোর দিকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, এই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সঙ্গে রয়েছে বিদেশি নাগরিক নিবন্ধন দপ্তর (FRRO)। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী, আটক ব্যক্তিদের বিএসএফের (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স) হাতে তুলে দেওয়া হবে, যারা পরবর্তী ধাপে সীমান্তের নির্ধারিত পয়েন্ট থেকে তাদের বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে।
গুজরাট পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত দুই মাস ধরে রাজ্যজুড়ে ‘অবৈধ বিদেশি’ শনাক্তে একটি বিশেষ অভিযান চলছিল। সেই অভিযানের আওতায়ই এই ২০০ জনকে ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য না জানালেও কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের কাছে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত প্রায়শই বাংলাদেশি ‘অবৈধ অভিবাসী’ ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেয়। তবে এবার যেভাবে বিমানযোগে ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসীকে সীমান্ত এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো, তা বিরল এবং স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক ও কৌশলগত বার্তা বহন করে। অনেকে মনে করছেন, সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকবাহী বাসে হামলার পর কেন্দ্রীয় সরকার বিদেশি নাগরিকদের ওপর নজরদারি বাড়িয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে যদি প্রমাণিত হয় যে যাদের বাংলাদেশি বলা হচ্ছে, তারা আদতেই বাংলাদেশের নাগরিক কিনা, তা যথাযথ যাচাই ছাড়াই পুশইনের চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এছাড়া মানবাধিকার সংস্থাগুলোও নজর রাখছে এই অভিবাসন বিতাড়ন প্রক্রিয়ার ওপর।