
ছবি: সংগ্রহ
ইউটিউব খুললেই এখন একটাই নাম ঘুরে ফিরে আসছে, ‘চলো হারিয়ে যাই’। দর্শকেরা বলছেন,`এটা কোনো নাটক নয়, বরং বাস্তব জীবনের কাহিনি।' কেউ লিখেছেন, `অনেক দিন পর এমন একটা নাটক দেখলাম যা মনে গেঁথে গেছে।`আরেকজন মন্তব্য করেছেন, `এই বছরের সেরা নাটক।'
বলা হচ্ছে পরিচালক হাসিব হোসেনের পরিচালিত ও চিত্রনাট্য রচিত নাটক ‘চলো হারিয়ে যাই’-এর কথা। ৩ জুলাই ইউটিউব চ্যানেল ক্যাপিটাল ড্রামায় মুক্তি পাওয়া নাটকটি ইতিমধ্যেই দর্শকপ্রিয়তার শীর্ষে। মুক্তির চতুর্থ দিনেই এটি ইউটিউবের ট্রেন্ডিং তালিকায় উঠে আসে বাংলা নাটকের মধ্যে ১ নম্বরে এবং সাধারণ তালিকায় ৮ নম্বরে।
নাটকটির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব ও তটিনী। তাদের সঙ্গে আরও রয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা আবুল হায়াত ও দিলারা জামান, যা নাটকটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।
গল্পটা এমন কিছু মানুষকে নিয়ে, যারা পরস্পরের অচেনা হলেও এক জায়গায় মিলিত, তারা সবাই জীবন ও সম্পর্কের অসন্তোষে নীরব হাহাকার বয়ে বেড়াচ্ছে। এক মুহূর্তে তারা সিদ্ধান্ত নেয় সব ফেলে হারিয়ে যাওয়ার। গন্তব্য কক্সবাজার, সেখানে গিয়ে তারা ফিরে পায় আত্ম-অনুভব, সম্পর্কের গভীরতা ও জীবনের অর্থ।
প্রথম চার দিনেই নাটকটির ভিউ ছাড়িয়েছে ৩৭ লাখ, আর মন্তব্য করেছেন প্রায় ৭ হাজার দর্শক। তাদের মন্তব্যে উঠে এসেছে নাটকটির আবেগময়, জীবনঘনিষ্ঠ গল্পের প্রতিফলন।
একজন লিখেছেন,`ভেবেছিলাম সাধারণ একটা নাটক। কিন্তু শেষ দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি।' আরেকজনের মন্তব্য ছিল,`এই নাটক আমাকে জীবনের কিছু অদেখা অধ্যায়ের সামনে দাঁড় করিয়েছে। এমন গল্প এখন আর কেউ লেখে না।'
নির্মাতা হাসিব হোসেন বলেন,`এই নাটক আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। দর্শকের ভালোবাসা, ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়রদের প্রশংসা, সবই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।'
তিনি আরও বলেন,` মানুষ এখন দ্রুততার মধ্যে হারিয়ে ফেলেছে সম্পর্কের মানে। আমি চেয়েছি, দর্শক যেন নাটকের মধ্যে দিয়ে আবার জীবনকে ছুঁয়ে দেখতে পারেন।'
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সালমান আরাফাত, রাফসান শান্ত, মায়া রহমান, বাশার বাপ্পী, শারমিন সুলতানা শর্মী, সাজ্জাদ চৌধুরী প্রমুখ। প্রত্যেকে নিজ নিজ চরিত্রে আন্তরিক অভিনয় দিয়ে নাটকটিকে করে তুলেছেন আরও বাস্তব, আরও মানবিক।
এই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে আমাদেরই জীবনে। আমরা সবাই তো কোথাও না কোথাও ক্লান্ত, বিভ্রান্ত। আমাদের সবার মাঝেই এক টুকরো তৌসিফ, এক ফালি তটিনী লুকিয়ে থাকে, যারা একদিন জীবনের ভারে ডুবে গিয়ে হারিয়ে যেতে চায়। এই নাটক আমাদের হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে খুঁজে দেয় নিজেকে ফিরে পাওয়ার গল্প।
‘চলো হারিয়ে যাই’ নাটক নয়, এটি যেন আত্মার দরজা খুলে দেওয়া এক চুপচাপ জোরালো কণ্ঠস্বর।
যারা এখনও দেখেননি, তাদের জন্য এটা হতে পারে একটি অনুভবের ভ্রমণ।