
ছবি: সংগৃহীত।
রাজধানীর বুকে দুপুরের ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে এক মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো। আশপাশে শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে ছিল। কেউ এগিয়ে এল না। কেউ প্রতিবাদ করল না। কেউ এমনকি চিৎকারও করল না।
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনের সড়কে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে (৩৯) পিটিয়ে হত্যা করে একদল দুর্বৃত্ত। ইট-পাটকেল দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয় মাথা ও শরীর। বিবস্ত্র করে ফেলে তারা। ভিডিওতে দেখা যায়, এই ভয়াবহ দৃশ্যের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলো কেবল ‘দর্শক’। যেন কিছুই হয়নি। যেন এটা এই দেশের নিত্যদিনের রুটিন।
এ নিয়ে জুলাই- আগষ্ট আন্দোলনের সামনের সারির সক্রিয় কর্মী অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়েছেন।
তিনি বেশ ক'টি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
তিনি লিখেন, ‘আমার বাবা-মা আমার নিরাপত্তা নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন। আর আমার মেয়ে- সে শুধু আমাকেই পেয়েছে। আমিই তার পুরো পৃথিবী। কিন্তু আমি কীভাবে তাকে নিরাপদ রাখি এমন এক দেশে? আমরা আসলে কী ধরনের দেশে বাস করছি? এখানে নেই কোনো নিরাপত্তা। নেই মন শান্ত করার সুযোগ।
তিনি লিখেন, আমরা ভেবেছিলাম, সময় বদলাবে। স্বপ্ন দেখেছিলাম, এক নিরাপদ, সুন্দর ভবিষ্যতের। নতুন সরকার এলো, আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, আমরা অপেক্ষা করেছি, কিন্তু এখন যা দেখছি, তা ভয়াবহ। আর যদি কোনো নির্বাচিত সরকার পরিবর্তনের সাহস না রাখে, কোনো ভবিষ্যৎ দেখাতে না পারে, তাহলে এর মানে কী? আমি ভীত। আমি ক্ষুব্ধ। আর সবচেয়ে বেশি যেটা, তা হলো আমি ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছি ‘।
তিনি লিখেন ‘একজন মানুষকে এভাবে মেরে ফেলছে, আর বাকিরা দাঁড়িয়ে শুধু দেখলো! এটা কীভাবে সম্ভব? আমরা আসলে কোন দেশে বাস করছি? মানুষ দেখল, কিছুই করল না। এটাই সবচেয়ে ভয়ের বিষয়। আমি আর কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাই না। আর কেউ কি এটা অনুভব করছে? মনে হয় না, যেন আমরা নরকে বাস করছি? আর সরকার? নীরব। সব সময়ের মতোই। তারা কোথায়? তারা কথা বলে না কেন? তারা কিছু করে না কেন? কীভাবে একজন মানুষ এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে’।
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘এই দেশে আমি কি আদৌ নিরাপদ? আমি কি আমার মনের কথা বলার অধিকার রাখি? নাকি শুধু সত্য বলার অপরাধে আমিই হব পরবর্তী শিকার?’