
ছবি- সংগৃহিত
বয়স ৩৮ ছুঁয়ে ফেলেছেন কিছুদিন আগেই, তবে মাঠে তার পারফরম্যান্সে তার কোনো ছাপই নেই। বরং আরও দুর্দান্ত, আরও ক্ষুরধার। যেন বয়সকে থামিয়ে দিয়ে নতুন এক মেসিকে দেখছে ফুটবল বিশ্ব। মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) ইন্টার মায়ামির হয়ে টানা পঞ্চম ম্যাচে জোড়া গোল করে উড়ন্ত ফর্মেরই প্রমাণ দিলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি।
রবিবার ভোরে ন্যাশভিল এসসির বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় পায় মেসির দল ইন্টার মায়ামি। দলের উভয় গোলই এসেছে মেসির জাদুকরী পা থেকে।
এর মধ্য দিয়ে এমএলএস ইতিহাসে নতুন আরেকটি রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তিনি। গত ম্যাচে টানা চার ম্যাচে একাধিক গোল করা প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ইতিহাস গড়েন মেসি। এবার সেই রেকর্ডকে আরও বড় করে পাঁচ ম্যাচে উন্নীত করলেন এই বার্সা ও পিএসজি-র সাবেক ফরোয়ার্ড।
গত পাঁচ ম্যাচে মেসির জোড়া গোল এসেছে যথাক্রমে মন্ট্রিয়েল (দুইবার), কলম্বাস ক্রু, নিউ ইংল্যান্ড রেভ্যুলুশন ও সর্বশেষ ন্যাশভিল এসসির বিপক্ষে।
ন্যাশভিলের বিপক্ষে ম্যাচের ১৭তম মিনিটেই গোলের খাতা খোলেন মেসি। ফ্রি-কিক থেকে নিচু শটে দুর্দান্ত গোলটি করেন তিনি, যা ছিল ২০১৮ সালের পর তার ৩৫তম ফ্রি-কিক গোল। এই সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল করেছেন ৩৩টি। অর্থাৎ ফ্রি-কিক থেকেও এখন বেশি গোল এসেছে মেসির জাদুকরী বাঁ পা থেকে।
দ্বিতীয় গোলটি আসে ম্যাচের ৬২ মিনিটে। ন্যাশভিলের গোলরক্ষকের এক চূড়ান্ত ভুলে বল পেয়ে যান মেসি। সামনে থাকা এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নিখুঁত শটে বল পাঠিয়ে দেন জালে।
এই নিয়ে চলতি এমএলএস মৌসুমে ১৬ ম্যাচে মেসির গোল সংখ্যা দাঁড়াল ১৫। পাশাপাশি ৬টি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। অর্থাৎ ২১টি গোলে সরাসরি অবদান তার। ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর এ পর্যন্ত ৬৬ ম্যাচে তার গোলসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫-এ। জাতীয় দলসহ সব মিলিয়ে তার মোট গোল এখন ৮৭২টি।
ন্যাশভিলের হয়ে ম্যাচে একমাত্র গোলটি করেন হ্যানি মুখতার। তবে তা দলকে হার থেকে বাঁচাতে পারেনি। জয় নিশ্চিত করে ইস্টার্ন কনফারেন্সের পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে মায়ামি। টানা ষষ্ঠ জয় তুলে নিয়ে ১৯ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ এখন ৩৮ পয়েন্ট। শীর্ষে থাকা ফিলাডেলফিয়ার পয়েন্ট ২২ ম্যাচে ৪৩।
মেসির এমন ফর্মে মুগ্ধ ইন্টার মায়ামির কোচ ও তার সাবেক সতীর্থ হাভিয়ের মাশ্চেরানো বলেন, ‘সত্যি বলতে, মেসিকে এখন নিজের দলে পাওয়া যেন এক আশীর্বাদ। তার রেকর্ড ভাঙার ধারাবাহিকতা অবিশ্বাস্য। এখন তো প্রায় প্রতি তিনদিনেই একটা না একটা রেকর্ড হচ্ছে। সে শুধু একজন তারকা নয়, একজন নেতা, যে দেখাচ্ছে কীভাবে প্রতিযোগিতা করতে হয়। সে দলের সবার সঙ্গে সংযুক্ত এবং জানে কীভাবে নিজের পারফরম্যান্স ধরে রাখতে হয়’।
লিওনেল মেসির এমন ফর্ম যেন এক প্রশ্নই রেখে যায়, এবার এমএলএসে আর কী বাকি রেখেছেন তিনি? ফুটবল বিশ্ব অপেক্ষায় তার পরবর্তী চমকের।