
প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন ওয়ার্কস অ্যান্ড পেনশনস মন্ত্রী স্টিফেন টিমস (ছবি সংগৃহীত)
লন্ডনের মেনরপার্ক রবীদাসীয়া কমিউনিটি সেন্টার এক আলোছায়ার মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল ৩০শে আগস্ট। শত ধ্বনিতে, শত প্রাণে উদযাপিত হলো বাংলাদেশ হিন্দু এসোসিয়েশন ইউকে’র (BHAUK) ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, রজত জয়ন্তী।
যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগমন ঘটে বিপুল সংখ্যক সদস্য ও অতিথির, যেন এক অন্তর্জাল মেলবন্ধন।
সভাপতি প্রশান্ত পুরকায়স্থ বিইএম সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান উদ্বোধন, সাধারণ সম্পাদক সুজিত চৌধুরী সঞ্চালনায়। শ্রীশ্রী গীতা পাঠের মধুর ছন্দ, শঙ্খধ্বনির প্রতিধ্বনি, রবীন্দ্রসংগীতের সুরে শুরু হলো উৎসবের পর্ব।
প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্যের ওয়ার্কস অ্যান্ড পেনশনস মন্ত্রী স্টিফেন টিমস এমপি। তার বক্তব্যে তিনি বি এইচ এ ইউকের অগ্রগতি ও সামাজিক সম্প্রীতির প্রশংসা করে বলেন, ‘নতুন প্রজন্মই ভবিষ্যতে সংগঠনের কর্মকাণ্ড এগিয়ে নেবে।’
বিশেষ অতিথি প্রাক্তন এমপি বীরেন্দ্র শর্মা সংগঠনের সাফল্যকে এগিয়ে নিতে তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
রজত জয়ন্তীর সৌভাগ্য হয়ে উপস্থিত অতিথিরা উন্মোচন করলেন বিশেষ সংখ্যা ‘শিকড় (Roots)’।
সাধারণ সম্পাদক প্রদর্শন করলেন সাম্প্রতিক ত্রাণ তৎপরতার বিস্তৃত তথ্য, কোষাধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ দে তুলে ধরলেন আয়-ব্যয়ের হিসাব, সহ-সভাপতি প্রশান্ত দত্ত দেখালেন সংগঠনের ঐতিহাসিক কার্যক্রমের প্রামাণ্যচিত্র।
বিশিষ্ট সমাজকর্মী বিক্রম ব্যানার্জি আয়োজন করলেন ‘হিন্দু জেনোসাইড’ বিষয়ক প্রদর্শনী। যুবসম্পাদক রাজেন পাল তরুণদের আহ্বান জানালেন সমাজ ও সংগঠনের কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার।
উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌস সুলতান, প্রাক্তন মেয়র জ্যোৎস্না ইসলাম, ব্যারিস্টার এম.কিউ. হাসান, সাংবাদিক বাতিরুল হক সর্দারসহ বহু কমিউনিটি নেতা। নতুন নির্বাচিত ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন মুকুল রায় ও নিরন্তর দেব।
মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়, আর সনাতন ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রচারে বিশেষ অবদানের জন্য মহামায়াশীল পরিবারকে সম্মাননা জানানো হয়।
সাংস্কৃতিক সম্পাদক মহামায়া শীলের তত্ত্বাবধানে, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন জয়িতা চৌধুরী, প্রিয়ম পুরকায়স্থ এবং কিশোর-কিশোরী শিল্পীরা। নৃত্য পরিবেশন করেন তন্বী রায়, অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন কৃষ্ণ শীল ও অনন্যা চৌধুরী।
সভাপতি প্রশান্ত পুরকায়স্থ বিইএম ২৫ বছরের নিরলস সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য যুক্তরাজ্যব্যাপী সকল সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এ রজনী, যেখানে অতীতের সোনালী ছায়া বর্তমানের উজ্জ্বল আলোয় মিশেছে, সেখানে BHAUK-এর রজত জয়ন্তী হয়ে উঠল এক প্রেরণার উৎসব, এক মিলনের বার্তা।