https://www.emjanews.com/

10659

sylhet

প্রকাশিত

১৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:১৬

আপডেট

২০ অক্টোবর ২০২৫ ০০:৩৮

সিলেট

মামাতো ভাইকে নিয়ে স্ত্রী খুন: ওমানপ্রবাসী স্বামীর স্বীকারোক্তি

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:১৬

ছবি: সংগৃহীত।

সিলেটের লাক্কাতুরায় এক নারীর পচনধরা মরদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় পুলিশ উন্মোচন করেছে হত্যার নেপথ্য। ধর্ষণ বা দূর্ঘটনার নয়, বরং দাম্পত্য বিরোধের জেরেই ঘটেছিল এই হত্যাকাণ্ড।

পুলিশ ও তদন্তকারীরা জানায়, নিহত রাবেয়া বেগম (২৫), সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার থানার মওলারপাড় গ্রামের মৃত মাহতাব মিয়ার মেয়ে। তার স্বামী ফারুক আহমদ, যিনি ওমান ফেরত, দাম্পত্য বিরোধের জের ধরে স্ত্রীকে হত্যা করেছে।

আদালেতে দেওয়া জবানবন্দিতে ফারুক স্বীকার করেছে, স্ত্রী রাবেয়ার পূর্বের বিয়ের তথ্য গোপন রাখা ও পরকীয়া সংক্রান্ত বিবাদের কারণে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্য চলছিল। ১৩ অক্টোবর হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারতের অজুহাতে তিনি স্ত্রীকে সিলেটে আনে এবং সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উত্তর-পূর্ব দিকের নির্জন টিলায় নিয়ে গিয়ে মামাতো ভাই আল আমিনের সহায়তায় গলা টিপে হত্যা করে ঝোপের মধ্যে ফেলে দেয়।

নিহতের চাচা রিপন মিয়া ১৭ অক্টোবর এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং–১৭, ধারা ৩০২/৩৪)। ১৮ অক্টোবর ফারুক আদালতে হাজির হলে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।

পুলিশ জানায় মৃতদেহটি গত ১৪ অক্টোবর উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহটি আংশিক পচনধরা অবস্থায় ছিল। প্রাথমিকভাবে ওই নারীর বয়স প্রায় ২৫ বছর অনুমান করা হয়। পরনে ছিল নতুন লাল রঙের জমিন ছাপা শাড়ি, হালকা গোলাপি রঙের বোরকা, এবং গলায় হলুদ রঙের ওড়না পেঁচানো ছিল। মৃতদেহের পাশেই পাওয়া যায় একটি লেডিস হ্যান্ডব্যাগ, যার ভিতরে ছিল কয়েকটি জামাকাপড় এবং ব্যাগের পকেটে একটি ছোট মেমোরি কার্ড।

পিবিআই ও সিআইডি কর্তৃক আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করে কিন্তু আঙ্গুলে পচন ধরায় পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।পরবর্তীতে মেমোরি কার্ডে থাকা রেকর্ডকৃত মোবাইলের কথোপকথনের অডিও তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং সংশ্লিষ্ট নম্বরের সিডিআর সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে পুলিশ মৃত নারীর পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তদন্তে অগ্রগতি ঘটে এবং পুলিশের সন্দেহভাজন হিসেবে উঠে আসে নিহতের স্বামী সুনামগঞ্জ সদর থানার রাঙ্গারচর গ্রামের ওমান ফেরত আব্দুল আজিজের ছেলে ফারুক আহমেদ।

এরই ধারাবাহিকতায়  ১৭ অক্টোবর এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ দোয়ারাবাজার থানার রাঙ্গারচর  গ্রাম থেকে ফারুককে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর প্রাথমিকভাবে ফারুক হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করলেও, জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করলে সে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।

এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর আসামি আল আমিনকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।

পুলিশের প্রচেষ্টা ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারেই এ হত্যার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে।