
ছবি- সংগ্রহ
ইএন ডেস্ক।। বর্তমান সময়ে আবারও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসা নির্দেশনা মেনে চলা এবং যথাযথ সতর্কতা গ্রহণ করাই হলো প্রধান করণীয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নিলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব। নিচে করোনায় আক্রান্ত হলে করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো:
করোনা শনাক্তের পর প্রথম করণীয়:
উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত করোনা পরীক্ষার (RT-PCR বা Antigen Test) ব্যবস্থা নিতে হবে।
করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পর নিজেকে পরিবার ও সমাজ থেকে আলাদা করে আইসোলেশনে থাকতে হবে।
ঘরের আলাদা কক্ষে থাকতে হবে; সম্ভব হলে আলাদা টয়লেট ব্যবহার করতে হবে।
স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলুন:
সার্বক্ষণিক মাস্ক ব্যবহার করুন, বিশেষত পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সামনে গেলে।
ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।
ব্যবহৃত টিস্যু ও মাস্ক নিরাপদভাবে ফেলে দিতে হবে।
পুষ্টিকর খাবার ও তরল গ্রহণ:
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন (যেমন: ফলমূল, শাকসবজি, ডিম, মাছ)।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন — দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস।
গরম তরল (সুপ, চা, আদা-লেবু-পানিসহ পানীয়) উপকারী।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন:
জ্বর, কাশি বা শরীরে ব্যথা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
অ্যান্টিবায়োটিক বা স্টেরয়েড কখনোই নিজে থেকে সেবন করা যাবে না।
অক্সিজেন মাত্রা পরীক্ষা:
প্রতিদিন কয়েকবার করে অক্সিমিটার দিয়ে SpO2 পরীক্ষা করুন।
যদি অক্সিজেন মাত্রা ৯৪%-এর নিচে চলে যায়, তাহলে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।
মানসিকভাবে ইতিবাচক থাকা:
করোনা আক্রান্ত অবস্থায় মানসিক চাপ এড়ানো জরুরি।
আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখুন।
হালকা ব্যায়াম বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে উপকার পাওয়া যায়।
আইসোলেশন থেকে মুক্তি:
উপসর্গ না থাকলে করোনা শনাক্তের ১০ দিন পর এবং উপসর্গ থাকলে ১৪ দিন পর আইসোলেশন শেষ করা যায়।
তবে জ্বরসহ বড় কোনো উপসর্গ থাকলে সুস্থ হওয়ার পর আরও ৩ দিন বাড়তি আইসোলেশনে থাকা ভালো।
প্রয়োজনে স্বাস্থ্য সহায়তা:
করোনার উপসর্গ বা জটিলতা দেখা দিলে ১৬২৬৩ (স্বাস্থ্য বাতায়ন) নম্বরে ফোন করে চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া যায়। সরকারিভাবে অনেক এলাকায় হেল্পলাইন ও করোনা চিকিৎসা সেবা চালু রয়েছে, সেগুলোর তথ্য জেনে রাখুন।
করোনায় আক্রান্ত হলেও আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন ও নিয়মানুবর্তী হওয়াই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসা গ্রহণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং মানসিকভাবে ইতিবাচক থাকা — এই তিনটি বিষয় নিশ্চিত করতে পারলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই করোনা জয়ের সম্ভবনা থাকে খুবই বেশি।
সূত্র: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিডিডিএস।