শিরোনাম
সিলেট ২ আসন/বিএনপি নেতাকর্মীরা ব্যক্তি নয় ধানের শীষের পতাকাতলেই  আছে ,থাকবে : লুনা সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে দুর্ঘনায় ৩ জন নিহত: আহত ২৫ জরুরী তলবে আরিফুল হক চৌধুরী ঢাকায় মাঝরাতে বিএনপির চার নেতা বহিস্কার বিএনপিও যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে দিল সিলেট -৩ আসনের টিকেট নির্বাচনে এনসিপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণা সিলেট বিভাগে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন ৩ প্রবাসী মৌলভীবাজার-১ মিঠু, মৌলভীবাজার-২ সকু, মৌলভীবাজার-৩ নাসের এবং মৌলভীবাজার-৪ আসনে মজিবর বিএনপি’র মনোনয়ন পেলেন হবিগঞ্জ-২ জীবন, হবিগঞ্জ-৩ গউছ এবং হবিগঞ্জ-৪ আসনে ফয়সাল বিএনপি’র মনোনয়ন পেলেন সুনামগঞ্জ-১ আনিসুল, সুনামগঞ্জ-৩ কয়ছর এবং সুনামগঞ্জ-৫ আসনে মিলন বিএনপি’র মনোনয়ন পেলেন

https://www.emjanews.com/

10942

surplus

প্রকাশিত

২৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:৩৬

অন্যান্য

সাংবাদিকদের অধিকার সুরক্ষায় নতুন আইন: গুরুত্বপূর্ণ ধারা বাদ, উদ্বেগ সাংবাদিক মহলে

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:৩৬

ছবি: সংগৃহীত।

সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা ও অধিকার সুরক্ষায় সরকার একটি নতুন অধ্যাদেশ আনতে যাচ্ছে। তবে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রণীত মূল খসড়ার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুত করা প্রাথমিক খসড়ায় বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিশেষজ্ঞ ও কমিশন সদস্যদের মতে, এই ধারাগুলো বাদ পড়লে আইনটি সাংবাদিকদের প্রকৃত সুরক্ষা ও পেশাগত স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারবে না। ফলে সংস্কারের মূল লক্ষ্য প্রশ্নের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আইনের উদ্দেশ্য ও সংজ্ঞা

প্রস্তাবিত ‘সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর উদ্দেশ্য অংশে বলা হয়েছে, সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীরা প্রায়ই সহিংসতা, হুমকি ও হয়রানির শিকার হন বা শঙ্কায় থাকেন-তাই তাঁদের পর্যাপ্ত আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

অধ্যাদেশে ‘সাংবাদিক বা সংবাদকর্মী’ বলতে সার্বক্ষণিক, খণ্ডকালীন, ফ্রিল্যান্স ও বিদেশি গণমাধ্যমের কর্মীসহ সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, ফিচার লেখক, সংবাদদাতা, ভিডিও সম্পাদক, চিত্রগ্রাহক, কার্টুনিস্ট, গ্রাফিক ডিজাইনার ও নিবন্ধিত সংবাদকর্মীদের বোঝানো হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ ধারা বাদ পড়েছে

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মূল খসড়ায় সাংবাদিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, গোপনীয়তা ও স্বাধীনতা রক্ষায় বেশ কিছু শক্তিশালী ধারা ছিল। কিন্তু তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক খসড়ায় সেগুলোর অনেকটাই অনুপস্থিত।

যেসব ধারা বাদ পড়েছে:

সাংবাদিকদের ব্যক্তিগত বা পেশাগত জীবন ও সম্পদের ক্ষতি হয়-এমন কোনো কাজ কেউ করতে পারবে না।

সরকার সাংবাদিকদের পেশাগত স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেবে।

সাংবাদিকের জীবন, স্বাধীনতা ও গোপনীয়তা থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা যাবে না।

বলপ্রয়োগ করে সাংবাদিকের বাসা বা কার্যালয়ে প্রবেশ বা সম্পদ জব্দ করা যাবে না।

সাংবাদিক সরল বিশ্বাসে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না, যদি ভিন্ন উদ্দেশ্য প্রমাণিত না হয়।

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব সহকারী পুলিশ সুপারের নিচের পদমর্যাদার কর্মকর্তার কাছে যাবে না।

এই ধারাগুলো না থাকলে আইনটি সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হারাবে বলে কমিশনের সদস্যরা মনে করছেন।

বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ বলেন,‘তথ্য মন্ত্রণালয় যে ধরনের পরিবর্তন আনতে চাইছে, তাতে সংস্কারের মূল লক্ষ্যই অর্জিত হবে না। মনে হচ্ছে, মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তা এই প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছেন। যদি এই ধারা বাদ থাকে, তাহলে আইনের আর কোনো বাস্তব প্রয়োজন থাকবে না।’

তিনি আরও বলেন, আইনটি সাংবাদিকদের কার্যকর সুরক্ষা দিতে না পারলে এটি কেবল কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ থেকে যাবে।

মন্ত্রণালয়ের অবস্থান

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খসড়াটি এখনো চূড়ান্ত নয়। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে।

‘চূড়ান্ত হওয়ার আগে কোনো ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে বলা যাবে না,’- বলেন ওই কর্মকর্তা।

পেশাগত স্বাধীনতা নিয়ে শঙ্কা

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্যরা মনে করছেন, কমিশনের প্রণীত খসড়ায় সাংবাদিকদের জন্য একটি ‘আইনি সুরক্ষাবলয়’ তৈরির সুযোগ ছিল। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো বাদ দিলে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও পেশাগত নিরপেক্ষতা প্রশ্নে উদ্বেগ থেকেই যাবে।

তাঁদের মতে, সরকার যদি সাংবাদিকদের জন্য একটি শক্তিশালী ও বাস্তবসম্মত আইন প্রণয়ন করতে চায়, তাহলে কমিশনের প্রস্তাবিত ধারাগুলো পুনর্বিবেচনা করা জরুরি।