ছবি:সেন্টমার্টিন
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজার–সেন্টমার্টিন নৌরুটে আবারও পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হচ্ছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি-টানা দুই মাস পর্যটকেরা সেন্টমার্টিনে রাতযাপনের সুযোগ পাবেন। তবে প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে যেতে পারবেন না এবং মানতে হবে পরিবেশ অধিদপ্তরের জারি করা ১২টি নির্দেশনা।
জেলা প্রশাসন জানায়, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া জেটিঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ৭টায় জাহাজ ছেড়ে সেন্টমার্টিন যাবে এবং পরের দিন বেলা ৩টায় সেন্টমার্টিন থেকে ফিরে আসবে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম জানান, চারটি জাহাজ- এমভি কর্ণফুলি এক্সপ্রেস, এমভি বারো আউলিয়া, কেয়ারি সিন্দাবাদ ও কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন- চলাচলের জন্য অনুমতি পেয়েছে। টেকনাফের বদলে এবার নিরাপত্তার কারণে কক্সবাজার শহর থেকে জাহাজ চলাচল করবে।
পর্যটকবাহী জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি-ক্রুজ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, নভেম্বর মাসে রাতযাপনের অনুমতি না থাকায় পর্যটকদের আগ্রহ কম ছিল। তাই জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে ডিসেম্বর থেকে রাতযাপনের সুযোগ থাকায় পর্যটকেরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন জানান, প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি পর্যটককে যেতে দেওয়া হবে না। নুনিয়ারছড়া ও সেন্টমার্টিন জেটিঘাটে কঠোর তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে।
পরিবেশ রক্ষায় সরকারের ১২ নির্দেশনা:
সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ মন্ত্রণালয় ১২টি নির্দেশনা জারি করে। এর মধ্যে রয়েছে—
বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান চলাচল করা যাবে না
পর্যটকদের অনলাইনে কিউআর কোডযুক্ত টিকিট বাধ্যতামূলক
নভেম্বর মাসে শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ; রাতযাপন নিষিদ্ধ
ডিসেম্বর–জানুয়ারি মাসে নিয়ন্ত্রিতভাবে রাতযাপনের অনুমতি
ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ
প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ হাজার পর্যটক
সৈকতে রাতের আলো, শব্দ বা বারবিকিউ পার্টি নিষিদ্ধ
কেয়াবন, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক–ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্য নষ্টকারী সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ
মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ মোটরচালিত যান চলাচল বন্ধ
পলিথিন ও একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বহন না করার নির্দেশ
পর্যটকদের নিজস্ব ফ্লাস্কে পানি আনার পরামর্শ
সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ আশা করছে, এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপ দায়িত্বশীল, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই পর্যটনের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে উঠবে।
